top of page

দেশি জাতের মুরগীর লাভজনক খামার

বাংলাদেশের গ্রামগুলোতে দেশি জাতের মুরগী পারিবারিক ভাবে পালন করলেও বাণিজ্যিক ভাবে খুব একটা পালন করা হয় না । এর পিছনে অন্যতম কারণ, অধীন উৎপাদনশীলতা নেই দেশি জাতের মুরগীর খামারগুলোতে । তবে আপনি যদি লাভের জন্য দেশি মুরগীর খামার গড়েন তবে আপনি লাভের আশা করতেই পারেন ।


দেশি জাতের মুরগীর লাভজনক খামার

কেন দেশি মুরগীর খামার করা দরকার ?

প্রান্তিক জনগোষ্ঠী বিশেষ করে নারী ও বেকার যুবকদের স্বাবলম্বী হতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে দেশি মুরগি পালন। স্বল্প বিনিয়োগ, সহজ ব্যাবস্থাপনা ও ভালো বাজার দরের কারনে দেশি মুরগী পালন বর্তমানে বেকার যুবকদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে। লাভজনকভাবে দেশি মুরগি পালন করতে হলে সঠিক পরিচর্যা ও খামার ব্যাবস্থাপনা সম্পর্কে ধারনা রাখতে হবে। এছাড়াও দেশি জাতের মুরগী যেন কালের বিবর্তনে হারিয়ে না যায় সেই দিক বিবেচনা করেও আমাদের এই খামার গঠন করা দরকা ।


দেশি মুরগি পালনের সুবিধা সমূহ কি কি ?

দেশি মুরগি পালন দিন দিন বেশকিছু কারনে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।

  • স্বল্প বিনিয়গে বেশি মুনাফা অর্জনে দেশি মুরগি পালন হতে পারে আদর্শ ব্যাবসা।

  • অন্যান্য হাইব্রীড মুরগির তুলনায় দেশি মুরগি পালন করা সহজ।

  • অন্যান্য যেকোনো মুরগির তুলনায় দেশি মুরগির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো।

  • দেশি মুরগির মৃত্যুহার কম।

  • দেশি মুরগি পালনে ঔষধ খরচ তেমন একটা হয়না।

  • উচ্ছিষ্ট বা সাধারন মানের খাদ্যেও দেশি মুরগি জীবনধারন করতে পারে।

  • প্রয়োজনীয় মিনারেল নিজে থেকেই চড়ে বেড়িয়ে সংগ্রহ করতে পারে।

  • দেশি মুরগী পালনের অন্যতম সুবিধা হলো, এর খাদ্য খরচ কম।


তবে সবচেয়ে মজার ও আর্কষনীয় বিষয় হলো অন্য অন্য মুরগীর তুলনায় দেশি জাতের মুরগীর বাজার চাহিদা ও দাম বেশ ভালো । অন্য অন্য মুরগীর তুলনায় দেশি মুরগীর দাম কমে না । একটি নিদির্ষ্ট স্কেলে দাম বজায় থাকে । বিশেষ করে শহরের দোকানগুলোকে দেশি মুরগীর চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে ।


যেভাবে দেশি মুরগী পালন করবেন ?

অন্য অন্য মুরগীর তুলনায় দেশি জাতের মুরগীর জন্য তেমন কোনো শর্ত প্রযোজ্য নেই । তবে, লাভজনক খামার গড়ে তুলতে চাইলে বায়োসিকিউরিটি ভালোভাবে মেনে চলতে হবে। আপনি যদি সঠিক মাত্রায় দেশি মুরগীর উৎপাদন বজায় রাখতে চান তবে উন্মুক্ত পরিবেশে দেশি মুরগী পালন উত্তম । মুরগীর বয়সের ভিত্তিতে আপনি আলাদা আলাদা ঘড় নির্বাচন করতে পারেন তবে অব্যশই মুরগীগুলোকে পর্যাপ্ত আলো, বাতাস ও পানি সরবরাহ করতে হবে । এছাড়াও প্রকৃতির উপর নির্ভযোগ্য করতে হবে ।


যেহেতু দেশি মুরগি প্রকৃতিগত ভাবে চঞ্চল ও চড়ে বেড়ানো স্বভাবের তাই এদেরকে সম্পূর্ন আবদ্ধ অবস্থায় ফার্মের মত করে পালন করাও উচিত নয়। সম্পূর্ন আবদ্ধ অবস্থায় দেশি মুরগি পালন করা হলে এটি এর গুনগত বৈশিষ্ট ক্রমান্বয়ে হারাতে থাকবে। প্রোল্ট্রি বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশি মুরগিকে আংশিক আবদ্ধ পদ্ধতিতে পালন করা সবথেকে উত্তম। এক্ষেত্রে দেশি মুরগির জন্য থাকার ঘর বা শেড ও পাশাপাশি চড়ে বেড়ানোর জন্য পর্যাপ্ত উন্মুক্ত পরিবেশ দিতে হবে। দিনের একটা নির্দিষ্ট সময়ে দেশি মুরগি চড়ে বেড়িয়ে প্রয়োজনীয় খাদ্য ও মিনারেল সংগ্রহ করবে। এর ফলে মুরগি পালনের খাদ্য খরচও কমে আসবে।


দেশী মুরগীর খাদ্য তালিকা

লাভজনকভাবে দেশি মুরগি পালনে জন্য খাদ্য খরচ কমিয়ে আনা জরুরী। বাজারে প্রাপ্ত সোনালী ফিডের সাথে দানাদার জাতীয় খাদ্য দিতে হবে। চড়ে বেরিয়ে দেশি মুরগি নিজে থেকেই ঘাস, শাক-সবজি ও লতাপাতা খেয়ে থাকে। এছাড়াও প্রয়োজনীয় মিনারেল এরা নিজে থেকেই সংগ্রহ করতে পারে। শুধুমাত্র ফিড খাইয়ে দেশি মুরগি পালন করলে এর মাংসের স্বাদ ও গুনগত বৈশিষ্ট লোপ পায়। ফলে উপোযুক্ত বাজার দর পাওয়া যায়না। অপরদিকে শুধুমাত্র দানাদার খাদ্য প্রয়োগ করেও কাংখিত ওজন পাওয়া যায়না। এক্ষেত্রে আমাদের পরামর্শ ৬০ ভাগ ফিড ও বাকি ৪০ ভাগ দানাদার খাদ্য দেয়া যেতে পারে। দানাদার খাদ্য হিসেবে ধান, চালের খুদ, গম, ভুট্টা ভাঙ্গা, বিভিন্ন ডাল ও শষ্যদানা দেয়া যেতে পারে।


২৫/০৬/২০২৪ তারিখের তথ্য অনুযায়ী, ঢাকার অভ্যন্তরীন শহর বা শহরতলীগুলোতে দেশি জাতের মুরগীর দাম ছিল প্রতি কেজি ৬০০-৬৫০ টাকা এবং গত ২ মাস পূর্বেও এর দাম ছিল ৫৬০-৬০০ টাকা । তাই প্রাথমিক ধারনা থেকে বলাই যায় দেশি মুরগীর খামারে লাভজনক অপারসম্ভানণা আছে ।

Comments


bottom of page